বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনের মতো মঙ্গল, বুধ, শুক্র বা আমাদের পৃথিবী গ্রহের বলয় নেই কেন?
বৃহস্পতি,শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনের মতো মঙ্গল,বুধ, শুক্র বা আমাদের পৃথিবী গ্রহের বলয় নেই কেন
এই প্রশ্নটি আজকাল বহু জায়গায় ঘোড়াফেরা করছে। কিন্তু সঠিক উত্তর খুব মানুষ ই পাচ্ছে। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর তোমাদের সামনে তুলে ধরবো.
বৃহস্পতি,শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনের মতো মঙ্গল,বুধ, শুক্র বা আমাদের পৃথিবী গ্রহের বলয় নেই কেন
প্রথমত, সূর্য থেকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্বের পর থেকে প্রাকৃতিক ভাবে বরফ মহাকাশে দীর্ঘ সময়কালীন থাকতে পারে। তার কম হলে সূর্যের উত্তাপ এবং বিকিরণের ফলে বরফ মহাকাশে স্থায়ী গঠন তৈরি করতে পারে না। এই নির্দিষ্ট দূরত্বকে frost line বলা হয়। আমাদের সৌরজগতে এই দূরত্ব হলো 5 AU যা মঙ্গল গ্রহ ছাড়িয়ে গ্রহাণু বলয়ের মধ্যে রয়েছে। ফলে মঙ্গল গ্রহ পর্যন্ত প্রাকৃতিক বরফের বলয় তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। সূর্যের বিকিরণ এবং উত্তাপ এই সীমার মধ্যে থাকা বরফের বলয়কে নিমেষে উড়িয়ে দেবে। বৃহস্পতি এবং অন্যান্য গ্রহগুলি এই সীমানার অনেক বাইরে হওয়ায় বরফের বলয় স্থায়ীভাবে থাকতে পারে।
দ্বিতীয়ত, একটি উপগ্রহ বা মহাজাগতিক বস্তু কোনো গ্রহের একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের থেকে কাছাকাছি আসলে গ্রহের অভিকর্ষের টানে ভেঙে টুকরো হয়ে যায়। এই টুকরোগুলো পরবর্তী সময়ে সেই গ্রহের চারিদিকে বলয়ের সৃষ্টি করে। সেই নির্দিষ্ট দূরত্বকে Roche limit বলে। এই সীমা ওই দুটি বস্তুর ভরের উপর নির্ভরশীল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় পৃথিবী এবং চাঁদের ক্ষেত্রে এই Roche limit হলো প্রায় 10000 কিমি যা তাদের পারস্পরিক দূরত্বের চেয়ে অনেক কম। সুতরাং পৃথিবীর অভিকর্ষের জন্য চাঁদ কখনোই ভেঙে টুকরো হয়ে যেতে পারে না। অপেক্ষাকৃত বড়ো গ্রহের ক্ষেত্রে এই Roche limit অনেক বেশি এবং সেই গ্রহগুলি অনেকগুলি উপগ্রহ সংগ্রহ করতে পেরেছে। তাই তাদের স্থায়ী বলয় রয়েছে।
বর্তমানে মঙ্গল গ্রহের উপগ্রহ ফোবস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলের আরও কাছে চলে আসছে। এটা ধারণা করা হয় যে আগামী 50 মিলিয়ন বছর পরে ফোবস মঙ্গলের Roche limit পার করে কাছে চলে আসবে এবং মঙ্গলের অভিকর্ষজ টানের ফলে ভেঙ্গে টুকরো হয়ে গিয়ে তার চারিপাশে বলয়ের সৃষ্টি করবে।