WBBSE Class 10 History 3rd Chapter Notes : মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের বড়ো প্রশ্ন উওর হিসাবে আজকের এই ব্লগ পোস্টে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য 'প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ের 2 মার্কের 16টি প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হবে। Class X History 3rd Chapter থেকে শেয়ার করা আজকের এই প্রশ্ন থেকেই কিন্তু বিগত বছরের পরীক্ষাগুলো যে প্রশ্ন এসেছে এবং আশা করছি তোমাদের এবছরের পরীক্ষাতেও প্রশ্ন কমন পাবে।
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ের 2 মার্কের প্রশ্ন ও উত্তর || WB Class 10 History 3rd Chapter Question Answers 2025
1) বিপ্লব বলতে কী বোঝায়???
উওরঃ বিপ্লব বলতে কী বোঝায় এমন একটি প্রকিয়া, যার মাধ্যমে কোনো প্রচলিত ব্যবস্থা, বা সমাজের কোনো একটি জিনিস, যেমন - রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা যেকোনো সামাজিক ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন ঘটে যাওয়াই হলো বিপ্লব।। যেমন - ইউরোপের শিল্পবিপ্লব, 1789 এর ফরাসি বিপ্লব।।
2) অরণ্য আইন কী??
উওরঃ ব্রিটিশ সরকার, ভারতের বনজ সম্পদ সরকারি ভাবে ব্যবহার করার জন্য, এবং তার সাথে সাথে ভারতের অরণ্যের উপর ব্রিটিশ সরকারের অধিকার বসিয়ে, ভারতীয় অরণ্যের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার জন্য, ব্রিটিশ সরকার 1865 খ্রিষ্টাব্দে, এবং 1878 খ্রিষ্টাব্দে দুটি আইন প্রনয়ন করে।। এবং এই আইন দুটিকেই - "অরণ্য আইন বলা " -হয়।।
3) জঙ্গলমহল কাকে বলা হয়??
উওরঃ বর্তমান মেদিনীপুর জেলার চুয়ার অধ্যুষিত অঞ্চলে একসময় প্রচুর জঙ্গল ছিল।। এবং এরকম জঙ্গলাকীর্ণ অবস্থা থাকার জন্যই মেদিনীপুরের চুয়ার অধ্যুষিত অঞ্চল কে জঙ্গলমহল বলা হয়।।।
4) দিকু কী বা দিকু কাদের বলা হতো??
উওরঃ প্রধানত আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে,যেমন চুয়ার, সাঁওতাল বা কোল অধ্যুষিত অঞ্চলে কোন বহিরাগত মহাজন', বহিরাগত ব্যবসায়ী বা বহিরাগত জমিদারদের দিকু বলা হতো।। আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে দিকুরা ছিল সবসময়ই খারাপ!! কারণ আদিবাসী অঞ্চলের আদিবাসীরা ছিল নিরক্ষর এবং এই নিরক্ষর মানুষদের দিকুরা বিভিন্নভাবে ঠকিয়ে! তাদের খারাপ চুক্তিপত্রে সই করিয়ে তাদের বিপর্যস্ত করে দিত।।।
5) উলগুলান বলতে কী বোঝায়??
অথবা,মুন্ডা উলগুলান কী??
উওরঃ বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে 1899-90 খ্রিষ্টাব্দে মুন্ডা বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল।। জমিদার এবং ইংরেজদের বিভিন্ন অত্যাচারের কারণে শুরু মুন্ডাদের এই বিদ্রোহ - উলগুলান নামে পরিচিত।। উলগুলান শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো ভয়ংকর বিশৃঙ্খলা বা, প্রবল বিক্ষোভ।।
6) মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য কী ছিল??
উওরঃ ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে, বীরসা মুন্ডার নেতৃত্বে পরিচালিত, মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য ছিল-
১) প্রথমত: যেহুতু ব্রিটিশ সরকার মুন্ডা সমাজের নিয়ম কানুন, এবং তাদের সাধারণ জীবনে হস্তক্ষেপ করে তাদের স্বাভাবিক জীবন- যাপনে বাধা সৃষ্টি করেছিল, এবং মুন্ডাদের চিরাচরিত অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করে,তাই মুন্ডা বিদ্রোহের প্রথম লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ সরকারের এইসব শোষণ থেকে মুক্তি পাওয়া।।
২) দ্বিতীয়ত মুন্ডাদের জন্য এমন একটি স্বাধীন মুন্ডা সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যেখানে ব্রিটিশ সরকারের কোনো অধিকার থাকবে না।।
৩) তৃতীয়ত মুন্ডারা বিদ্রোহের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব খুৎকাঠি প্রথা ফিরে পেতে চেয়েছিল এবং তাদের জমি থেকে জমিদার ও ব্রিটিশদের অধিকার শেষ করতে চেয়েছিল।।।
7) খুৎকাঠি প্রথা বলতে কী বোঝায়??
উওরঃ খুৎকাঠি প্রথা হলো জমির মালিকানা সংক্রান্ত একটি ব্যবস্থা, যেটা মুন্ডা সমাজে প্রচলিত ছিল।।
সাধারণত কোনো জমির মালিক, সাধারণ ভাবে একজন বা একটি পরিবারই হতে পারে। কিন্তু এই মালিকানা ব্যবস্থায়, কোনো একটি জমির মালিক থাকতো অনেকজন।। অর্থাৎ জমির যৌথ মালিকানা ব্যবস্থা।।
8) ফরাজি আন্দোলন কী?? অথবা ফরাজি আন্দোলন কাকে বলে??
উওরঃ ফরাজি আন্দোলন হল মুসলিমদের একটি ধর্মীয় আন্দোলন।। ফরাজি শব্দের অর্থ হলো ইসলাম নির্ধারিত বাধ্যতামূলক কর্তব্য।। হাজী শরীয়ত উল্লাহ নামে একজন ব্যক্তি ভারতবর্ষে ইসলামের শুদ্ধিকরণ করে ভারতবর্ষকে দার -উল- হাবর অর্থাৎ বিধর্মীর দেশ থেকে থেকে দার-উর-ইসলাম অর্থাৎ ইসলামের দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। এবং হাজী শরীয়ত উল্লাহের এই ধর্মীয় আন্দোলনকেই ফরাজি আন্দোলন বলা হয়।।
9) দুদুমিঞা স্বরনীয় কেন??
উওরঃ দুদুমিঞা, অর্থাৎ - মহম্মদ মহসিন স্বরনীয় হওয়ার প্রথম কারণ হলো - তিনি ছিলেন ফরাজি আন্দোলনের মুল নেতা হাজি শরিয়ৎ উল্লাহের পুএ।।- দ্বিতীয়ত হাজি শরিয়ৎ উল্লাহের মৃত্যুর পর দুদুমিঞা ফরাজি আন্দোলন পরিচালনা করতে শুরু করেন।। যখন দুদুমিঞা ফরাজি আন্দোলনে নেতৃত্বে দিতে শুরু করেছিলেন, তখন ফরাজি আন্দোলন ধর্মীয় আন্দোলনের বদলে, একটি কৃষক আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল।। এবং এজন্যই ফরাজি আন্দোলন এক নতুন রুপ পেয়েছিল।। যার জন্য দুদুমিঞা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই, দরিদ্র কৃষকদের মধ্যে এবং, ফরাজি আন্দোলনের বাকি সদস্যদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।।
10) নীলকররা নীলচাষিদের ওপর কীভাবে অত্যাচার করতো? তা সংক্ষেপে লেখো।।
উওরঃ নীলকর সাহেবদেরা নীলচাষিদের ওপর নানা ভাবে অত্যাচার করতো।। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ ছিল, নীলচাষ করাটাই!! কারণ যখন নীলচাষিরা তাদের জমিতে নীলচাষ করতো, তখন তাদের জমিতে খাদ্যফসল চাষ করতে পারতো না!! যার ফলে চাষিদের গড়ে খাদ্যাভাব দেখা যেত।।যার জন্য অনেক চাষিকে না খেয়ে দিন কাটাতে হতো।। যখন কোনো চাষি নীলচাষ করতে চাইতো না, তখন ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিত। এরপর সেই চাষিকে গরু বাধা খুটির সঙ্গে বেধে চাবুক মারা হতো।। তার গবাদি পশু ছিনিয়ে নেওয়া হতো!! এমনকি সেই চাষির ঘরে স্ত্রীকন্যাকেও নির্যাতন করা হতো।। এবং এভাবেই চলতো নীলকর সাহেবদের অত্যাচার।।
11) বারাসাত বিদ্রোহ কী??
উওরঃ ভারতে ওয়াহাবী আন্দোলনের প্রানপুরুষ ছিলেন সৈয়দ আহন্মেদ। মক্কায় হজ করতে গিয়ে, বাংলার তিতুমীর সৈয়দ আহন্মেদের সংস্পর্শে আসেন, এবং তিতুমীর সেখানে ওয়াহাবি আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হন।। এবং এরপর তিতুমীর বাংলায় ফিরে এসে দরিদ্র কৃষক ও নির্যাতিত মুসলিমদের নিয়ে - অত্যাচারী জমিদার ও নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেন এবং এই বিদ্রোহ ই বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
12) পাগলপন্থী বিদ্রোহ কী??
বা পাগলপন্থী বিদ্রোহ বলতে কী বোঝায়??
উওরঃ উনিশ শতকে ফকির করিমশাহ নামে একজন ব্যক্তি ময়মনসিংহ জেলার সুসঙ্গ, শেরপুর অঞ্চলে বসবাসকারী গারো উপজাতির মধ্যে এক নতুন ধর্মমত প্রচার করেন।। আর তখন থেকে গারো উপজাতি পাগলপন্থী নামে পরিচিত হয়।। এরপর ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ফকির করিমশাহের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র টিপুশাহ্বর নেতৃত্বে পাগলপন্থী গারো জনগণ অত্যাচারী জমিদার, মহাজন ও ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে শামিল হয়।। এবং পাগলপন্থীদের আন্দোলনই পাগলপন্থী বিদ্রোহ নামে পরিচিত।।
13) সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল কেন??
উওরঃ সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট কয়েকটি কারণ ছিল।। তার মধ্যে প্রধান কারণগুলি ছিল -
১) প্রথমত এই বিদ্রোহের নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য ছিল না।। বিদ্রোহের বিদ্রোহীরা শুধুমাত্র সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিদ্রোহ চালিয়ে গেছেন।। কিন্তু এদের কোন লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কখনোই ঠিক না থাকায় বিদ্রোহীরা তাদের বিদ্রোহটাকে নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি।।
২) সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার দ্বিতীয় কারণ ছিল এই বিদ্রোহকে নেতৃত্বে দেওয়ার মতো যোগ্য নেতার অভাব।। এই বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানী, মজনু শাহ, চিরাগ আলি প্রমুখ।। কিন্তু এরা চলে যাওয়ার পরেই এই বিদ্রোহে যোগ্য নেতার অভাব দেখা দিয়েছিল। যার জন্য বিদ্রোহকে চালিয়ে যাওয়া খুব মুশকিল হয়ে পড়েছিল।।
৩) সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় তৃতীয় এবং মূল কারণ ছিল এই বিদ্রোহের বিদ্রোহীদের কাছে অতটাও আধুনিক অস্ত্র ছিলনা যা ব্রিটিশ সরকারের সৈন্যদের কাছে ছিল।। বিদ্রোহীদের কাছে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র না থাকায় বিদ্রোহীরা খুব সহজেই এই বিদ্রোহের হেরে গিয়েছিল।।
14) নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ভূমিকা কিরূপ ছিল??
উওরঃ হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় যেমন ব্রিটিশ সরকারের বাকি অন্যান্য খারাপ দিক গুলি তার পত্রিকায় আলোচনা করতেন, ঠিক তেমনিভাবে তিনি নীলকর সাহেবদের অত্যাচার! ও অন্যান্য খারাপ কাজ কর্মের ব্যপারগুলোও তার প্রতিকার পত্রিকায় নিয়মিতভাবে প্রকাশ করতেন।। হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় তার হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার মাধ্যমে নীলকর সাহেবদের করা অত্যাচারের ফলে নীলচাষীদের দুরাবস্থা তার পত্রিকার মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরেছিলেন।। এছাড়াও হরিশচন্দর মুখোপাধ্যায় নীলচাষিরা, নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিলেন!! সেই মামলা গুলো চালানোর জন্য হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় সেই নীল চাষীদের সব সময় আর্থিক ভাবে সাহায্য করতেন।।।
15) তিন কাঠিয়া প্রথা কী??
উওরঃ তিনকাঠিয়া প্রথা হল এমন একটি প্রথা, যেটা বিহারে প্রচলিত ছিল।। বিহারের চম্পারণে নীলকর সাহেবরা, নীল চাষিদের জমিতে প্রতি এক বিঘার তিন কাঠা জমিতে নীল চাষ করতে বাধ্য করতো। এই ব্যবস্থাই তিন কাঠিয়া প্রথা নামে পরিচিত।।।
16) এলাকা চাষ, ও - বে -এলাকা চাষ কি??
উওরঃ নীলকর সাহেবরা প্রধানত দুই ভাবে নীল চাষ করতো।। প্রথম ভাবে কোন নীলকর সাহেব কোন জমিদারের কাছ থেকে জমি নিয়ে সেই জমিদারের জমিতে নীল চাষ করতো।। এবং জমিদারের কাছ থেকে জমি নিয়ে নীল চাষ করার এই পদ্ধতিকে এলাকা চাষ বা নিজ- আবাদি। এক্ষেত্রে অনেক সময় সেই নীলকর সাহেবের খুব বেশি লাভ বা মুনাফা হতো না।। এজন্য নীলকর সাহেবরা নীল চাষের অন্য একটি পদ্ধতি বের করেছিল। এবং সেই পদ্ধতি হলো বে-এলাকা চাষ।। এখন বেলাকা চাষ বলতে বোঝায় যখন কোনো নীলকর সাহেব কোনো চাষীকে কিছুটা অগ্রিম অর্থ দিয়ে বা দাদন দিয়ে তার নিজস্ব জমিতে নীল চাষ করাতো তখন সেই নীল চাষ পদ্ধতিকে বে-এলাকা চাষ বা রায়তি বলা হত।।।
এখানে ক্লিক করো : ইতিহাসের ধারণা অধ্যায়ের অনলাইন মকটেস্ট
এখানে ক্লিক করো : প্রতিরোধ বিদ্রোহ অধ্যায়ের অনলাইন মকটেস্ট
Keywords For This Article : WBBSE Class 10 History 3rd Chapter Questions Answers | Class X History 2Marks Question Answer 2025 | Madhyamik History Chapter 3 Notes | দশম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ের 2 মার্কের প্রশ্ন উত্তর ও সাজেশন 2025
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন