WB Class 11 Political Science Question Answer & Notes | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

0

রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর

WB Class 11 Political Science Question Answer & Notes | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর


উওর : রাষ্ট্র সম্পর্কে বহু সংজ্ঞা রয়েছে ।তার মধ্যে একটি হলো গার্নার প্রদত্ত সংজ্ঞা। গার্নার রাষ্ট্রের যে সংজ্ঞা দিয়েছেন, তা - হল রাষ্ট্র হল এমন একটি অতি বৃহৎ নাতি বৃহৎ জনসমাজ, যা নির্দিষ্ট ভূখন্ড বসবাস করে  এবং সেই জনগররা মিলে একটি সুগঠিত সরকার গঠন করে যা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণমুক্ত। এবং জনগণ সরকারের প্রতি স্বাভাবিক আনুগত্য প্রদর্শন করে, তাকে রাষ্ট্র বলে।

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা বৈশিষ্ট্য : গার্নার রাষ্ট্র সম্পর্কে যে সংজ্ঞা দিয়েছেন, তার মধ্যেই আমরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পারি। যেমন - 

জনসমষ্টি : রাষ্ট্র সম্পর্কে গার্নার প্রদত্ত সংজ্ঞা প্রথম যে বৈশিষ্ট্য বা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সম্পর্কে জানা যায়, তা হলো জনসমষ্টি।। কোনো একটি রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো তার জনসমষ্টি। প্রতিটি রাষ্ট্রের জনসমষ্টি রয়েছে। কিন্তু কোনো রাষ্ট্রে জনসমষ্টি নির্দিষ্ট নয়। প্রতিটি রাষ্ট্রের জনসমষ্টি কমও হতে পারে আবার বেশিও হতে পারে।। একটি রাষ্ট্রের প্রধানত তিন ধরনের জনসমষ্টি থাকে। যথা - 

নাগরিক, বিদেশী এবং প্রজা

◆ রাত্রে নাগরিক বলতে বোঝায় যারা একটি রাষ্ট্রের স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন এবং তারা আইনসম্মতভাবে রাষ্ট্র থেকে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি স্বাভাবিক আনুগত্য প্রদর্শন করে,তাদের বলা হয় নাগরিক।

◆  রাষ্ট্রের বিদেশি বলতে বোঝায়, যখন অন্য কোনো এক রাষ্ট্রের নাগরিক, অপর কোনো রাষ্ট্রে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে, তখন তাকে বলা হয় বিদেশী।

◆ রাষ্ট্রের প্রজা বলতে বোঝায়,যখন একটি রাষ্ট্রের জনগণ অন্য কোনো রাষ্ট্র দ্বারা শাসিত হয়,তখন সেই রাষ্ট্রের জনগণকে বলা হয় প্রজা।

নির্দিষ্ট ভূখন্ড : কোনো রাষ্ট্রের জনসমষ্টি নির্দিষ্ট হয় না কিন্তু প্রতিটি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তার আয়তন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন। রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ক্ষেত্রে যদি সুনির্দিষ্ট না হয় তাহলে অপর এক রাষ্ট্রের সঙ্গে আয়তন সংক্রান্ত বিরোধের সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য প্রতিটি রাষ্ট্রের আয়তন হয় নির্দিষ্ট।। রাষ্ট্রের ভূখণ্ড বলতে শুধুমাত্র স্থলভাগ কেই বোঝায় না। নির্দিষ্ট ভূখন্ড বলতে জলভাগ, স্থলভাগ এমনকি বায়ুমন্ডলকেও বোঝা। অর্থাৎ একটি রাষ্ট্রের মধ্যে পাহাড়-পর্বত,নদী-নালা,সমুদ্র, পুকুর, বন - জঙ্গল ইত্যাদি  এমনকি আকাশপথকের কিছু অংশকেও বোঝায়। 

সরকার : রাষ্ট্রের তৃতীয় এবং একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সরকার। প্রতিটি রাষ্ট্র সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। রাষ্ট্রের সমস্ত বিমুর্ত ধারণাকে সরকার বাস্তবায়িত করে।  সরকার ই একটি রাষ্ট্রকে সঠিক ভাবে পরিচালিত করে বলে সরকারকে একটি রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক বলে অভিহিত করা হয়। 

সার্বভৌমিকতা : রাষ্ট্রের চতুর্থ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতা। রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতা বলতে এমন এক ক্ষমতাকে বোঝায়, যে ক্ষমতার মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র অপর কোনো রাষ্ট্রের থেকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকে। রাষ্ট্র সার্বভৌম কথার অর্থ হল সমাজের মধ্যে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত বাঁ চরম কর্তৃত্ব রয়েছে। আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের এই চূড়ান্ত ক্ষমতা প্রকাশিত হয় বলে প্রতিটি ব্যক্তি,সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠান সেই আইন মেনে চলতে বাধ্য থাকে। তাই অধ্যাপক গেটেল সার্বভৌমিকতার ধারণাকে আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি বলে বর্ণনা করেছেন। একটি সংগঠনের যদি নির্দিষ্ট ভূখন্ড, জনসমষ্টি এবং সরকার থাকে কিন্তু তার সার্বভৌমিকতা বা সার্বভৌম ক্ষমতা না থাকে,তাহলে তাকে রাষ্ট্র বলে অভিহিত করা যায়ন। তাই সার্বভৌমিকতাকে একটি রাষ্ট্রের প্রাণ বলে অভিহিত করা হয়। 

রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতা দুই প্রকার। যথা- অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমিকতা এবং বাহ্যিক সার্বভৌম ক্ষমতা। 

◆ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমিকতা বলতে বোঝায় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত ক্ষমতা। 

◆ অন্যদিকে বাহ্যিক সার্বভৌমিকতা বলতে সেই ক্ষমতাকে বোঝায়,যেই ক্ষমতার মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র অপর এক রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ থেকে প্রায় সম্পূর্ণ বা সম্পূর্ণভাবে মুক্ত থাকে। 

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ উপরিক্ত চারটি উপাদান ছাড়াও রাষ্ট্রের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। যদিও সেগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না, কিন্তু তবুও সেগুলো সম্পর্কে আমাদের আলোচনা করা উচিত।

স্বায়িত্ব : অনেকেই রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে রাষ্ট্রের স্থায়িত্বের কথা বলেছেন। অনেকের মতে, যে রাষ্ট্রে স্থায়িত্ব নেই তাকে আর যাই হোক কোনো রাষ্ট্র বলে অভিহিত করা যায় না। কিন্তু মার্কসবাদীরা রাষ্ট্রকে শাশ্বত বা চিরন্তর বলে মনে করেন না।তাদের মতে শোষণের হাতিয়ার হিসেবে যে রাষ্ট্রের উৎপত্তি,শ্রেণীহীন ও শোষন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে তা আপনা থেকেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। 

অন্যান্য রাষ্ট্রের স্বীকৃতি : অন্যান্য রাষ্ট্রের স্বীকৃতি বলতে বোঝায় একটি রাষ্ট্রকে যখন অন্যান্য রাষ্ট্র " রাষ্ট্র " হিসেবে স্বীকৃতি দেবে,তখনই সেটিকে রাষ্ট্র বলা যাবে। অন্যান্য রাষ্ট্রের স্বীকৃতি বলতে সকল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি বোঝায় না। অধিকাংশ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি থাকলেই সেটি রাষ্ট্র' বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় বেশিরভাগ রাষ্ট্র নানা কারণে অথবা নিজেদের স্বার্থের ক্ষেত্রে অনেক রাষ্ট্রকেই রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। কিন্তু তাই বলে এটা নয় যে,অন্যান্য রাষ্ট্র যদি তাকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেয় তাহলে সেটা রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হবে না। যেমন- উত্তর কোরিয়া,ভিয়েতনাম এসব রাষ্ট্রকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী রাষ্ট্রগুলি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।  কিন্তু তবুও তারা রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হয়।

জাতীয়তাবাদ : অনেকে জাতীয়তাবাদের বন্ধনকে রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলে মনে করেন। তাদের মতে কোনো নির্দিষ্ট ভূখন্ড বসবাসকারী জনসমাজ যদি জাতীয়তাবাদের বন্ধনে আবদ্ধ না থাকে, তবে কখনোই রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে না। কিন্তু প্রধানত বিশ্বায়নের প্রবক্তারা ত এই অভিমতকে ভ্রান্ত বলে মনে করেন। তাদের মতে বিশ্বায়নের যুগে এরূপ দৃষ্টিভঙ্গি সংকীর্ণতা দোষে দুষ্ট।


Tags : WB Class 11 Political Science Question Answer & Notes | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর |  wb class 11 political science suggestion | wb class 11 political science notes | wb class 11 political science question answer 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top