গ্লাডিয়েটারের লড়াই কী? এবং কেন হতো? | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উওর
আমরা জানি যে প্রাচীন রোমের ক্রীতদাস প্রথার অবস্থিত ছিল। প্রাচীন রোমের ক্রীতদাসদের অবস্থা ছিল সবচেয়ে শোচনীয়। আমি এর একটি আগের পোস্টের মাধ্যমে ক্রীতদাসদের সম্পর্কে অনেক কিছু আলোচনা করেছি। এবং সেখানে আমি উল্লেখ করেছিলাম যে, ক্রীতদাসদের তাদের উপর কেমন করে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করা হতো। এবং সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে তারা কোনো রকম প্রতিবাদ করতে পারত না। কারণ তাদের সেই অধিকার ই ছিলনা। আর প্রতিবাদ করার কোনো অধিকার না থাকার কারণেই,কিছু ক্রীতদাসদের বিভিন্ন রকম অত্যাচার সহ্য করতো হতো। কিন্তু ক্রীতদাসদের যে সমস্ত অত্যাচার সহ্য করতে হতো, তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক ছিল এই গ্লাডিয়েটারের লড়াই।
গ্লাডিয়েটারের লড়াই কাকে বলে?
গ্লাডিয়েটারের লড়াই বলতে বোঝায়, প্রাচীন রোমের একপ্রকার নিষ্ঠুর ও অমানবিক অনুষ্ঠান বা খেলা। প্রাচীন রোমে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একপ্রকার খেলা বা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো।। সেই অনুষ্ঠানে একটি প্রতিযোগিতা রাখা হতো। সেই প্রতিযোগিতায় একজন ক্রীতদাসকে গ্লাডিয়েটার হিসেবে প্রতিযোগিতায় নামতে হতো। এবং সেই গ্লাডিয়েটরের বিরুদ্ধে থাকতো কোনএকটি ভয়ানক হিংস্র পশু। যেমন - বাঘ, সিংহ, ভালুক বা অন্য কোনো ধরনের হিংস্র পশু। একজন মানুষের সঙ্গে একটি হিংস্র পশুর সেই লড়াইকেই গ্লাডিয়েটর লড়াই বলা হতো।
গ্লাডিয়েটর লড়াই কেন করানো হতো? :
আমরা খুব সাধারণভাবে বলতে পারি গ্লাডিয়েটর লড়াই আয়োজন করা হতো উচ্চবিত্ত ব্যক্তিদের মনোরঞ্জনের জন্য। কিন্তু যদিও এক্ষেত্রে একটি ভালো দিন ছিল - যদি কোনো গ্লাডিয়েটার ভাগ্যক্রমে সেই লড়াই জিতে যেত, অর্থাৎ তার বিরুদ্ধে থাকা হিংস্র সিংহ, বাঘ বা ভাল্লুকক্স সে হারিয়ে দিত, তাহলে তার পরে সেই ক্রীতদাসকে তাঁর দাসত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হতো। এবং সে সম্পূর্ণভাবে একজন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে তার জীবন যাপন করতে পারতো। কিন্তু তেমনটা খুবই কম হতো। কারণ একজন দুর্বল ক্রীতদাসের পক্ষে একটি পশুকে হারানো কখনোই সম্ভব ছিল না। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই পশুর হাতে ক্রীতদাসের মৃত্য ঘটতো। আর এভাবে একটি পশুর হাতে সেই ক্রীতদাসের মৃত্যুটা সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকেই উপভোগ করতো। সুতরাং এটি ছিল তখনকার মানুষের মনোরঞ্জনের একটি মাধ্যম।