দর্শন বা Philosophy আসলে কি? দর্শন বা Philosophy কী নিয়ে আলোচনা করে এবং কেন ই বা দর্শন পড়া উচিত?
WBBSE Class 11 Philosophy First Chapter |
আজকের এই ব্লগে আমরা একাদশ শ্রেণীর দর্শন প্রথম অধ্যায় দর্শনের ধারণার কিছু বিষয় যেমন-
দর্শন বা Philosophy জিনিসটা আসলে কী? দর্শন বা Philosophy বলতে কী বোঝায়? দর্শন বা Philosophy কী নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো হয়তো তাদের মনে এখন জেগে উঠেছে যারা ভবিষ্যতে অর্থাৎ একাদশ শ্রেণীর দর্শন নিয়ে পড়তে যাও। আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমি তোমাদের সাথে দর্শনের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো এবং তোমাদের বোঝানোর চেষ্টা করব যে দর্শন জিনিসটা আসলে কি ও দর্শন কী কী নিয়ে আলোচনা করে এবং কেনই বাআমাদের দর্শন পড়া উচিত।।
দর্শন বা Philosophy আসলে কি?
তোর দর্শন সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের প্রথমে Philosophy ফিলোসোফি কথাটির অর্থ বুঝে নিতে হবে। Philosophy ফিলোসোফি কথাটি দুটি গ্রিক শব্দ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। Philos কথার অর্থ হল অনুরাগ বা আগ্রহ এবং Sophia সোফিয়া কথাটির অর্থ হল জ্ঞান ।অর্থাৎ এই দুটি শব্দের মিলনে তৈরি হয়েছে Philosophy ফিলোসফি কথাট যার অর্থ হয় জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ বা আগ্রহ। কিন্তু জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ বা আগ্রহ হচ্ছে পাশ্চাত্য দর্শনের ক্ষেত্রে। ভারতীয় দর্শনের ক্ষেত্রে দর্শন কথাটির অর্থ কিন্তু অন্য বোঝায়। ভারতীয় দর্শনে দর্শন বলতে আত্মদর্শন বোঝায়। এখানে আত্ম বলতে নিজেকে দেখা বা নিজেকে দেখা জানাকে বোঝায়।।
দর্শন বা Philosophy কী কী নিয়ে আলোচনা করে?
দর্শন শব্দটির অর্থ আলোচনা করে আমরা বুঝতে পারলাম যে দর্শন শব্দটির দুটি অর্থ। একটি হচ্ছে জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ বা আগ্রহ এবং অপরটি হলো আত্ম দর্শন বা নিজেকে জানা। এখন এই জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ বা নিজেকে জানার ক্ষেত্রে আমরা কি কি জানবো সেটাই হচ্ছে দর্শনের আলোচনা। তো প্রথমে দর্শন এমন একটি বিষয় যা এই পৃথিবীর সমস্ত কিছু নিয়ে আলোচনা করে। পৃথিবীতে এমন কোন বিষয় নেই যা দর্শন আলোচনা করতে পারে না বা করে না। কিন্তু এখানে তোমাদের বইয়ের ভাষা থেকে একটু বাইরে বেরিয়ে এসে বলতে চাই, দর্শন সম্পর্কে বিভিন্ন দার্শনিকরা তাদের নিজস্ব মতামত দিয়ে থাকেন। যেমন- আত্মা কিন, ঈশ্বর কী, আদতেও ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে কিনা - এসব নিয়ে বিভিন্ন দার্শনিকরা তাদের নিজের মত প্রকাশ করেন। এবং এভাবেই মূলত দর্শনের বিভিন্ন বিষয় গুলি আলোচনা করা হয়।
দর্শন পৃথিবীর সকল বিষয় নিয়ে কি করে আলোচনা করতে পারে?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে দর্শন যেহেতু এই পৃথিবীর সমস্ত কিছুকে নিয়ে আলোচনা করে, তাহলে দর্শন পৃথিবীর এত কিছু কে নিয়ে কিভাবে আলোচনা করে? কারণ পৃথিবী তার ছোটো নয়। পৃথিবীতে অসংখ্য বিষয় রয়েছে। তাহলে দর্শন এই অসংখ্য বিষয় গুলি কী করে আলোচনা করে?
তো এর উত্তর হচ্ছে দর্শন পৃথিবীর বিভিন্ন বিষয় গুলিকে কয়টি ভাগে ভাগ করে রেখেছে। এবং দর্শন সেই ভাগের মাধ্যমেই বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করে। যেমন -অধিবিদ্যা, নীতিবিদ্যা, জ্ঞান বিদ্যা, সমাজবিদ্যা, তর্কবিদ্যা ইত্যাদি ভাগের মাধ্যমেই বিভিন্ন দার্শনিক সম্প্রদায়ের দার্শনিকরা পৃথিবীর যাবতীয় বিষয় গুলি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।।
আমাদের দর্শন কেন পড়া উচিত?
আমাদের দর্শন কেন পড়া উচিত এই প্রশ্নটার সঠিক উত্তর হয় না। কারণ যেহেতু এটি আমাদের পাঠ্য বিষয় সেক্ষেত্রেও এটি আমাদের পড়তে হবে এবং এর বাইরেও দর্শনের গুরুত্ব যে একদমই নেই সেটা সম্পূর্ণ ভুল কারণ।। যেহেতু আমরা মানব সমাজে বাস করি এবং যেহেতু আমরা মানুষ, এবং দর্শন যেহেতু এই মানব সমাজ বা মানব জীবনকে নিয়েও আলোচনা করে, সে ক্ষেত্রে দর্শন পাঠ করলে তার কিছুটা লাভ আমাদের অবশ্যই হবে।। যেমন আমি যদি কয়েকটা খুব সহজ উদাহরন দিয়ে বলতে পারি, তাহলে আমি বলব যে - পাশ্চাত্য দর্শন এবং ভারতীয় দর্শনের বিভিন্ন শাখায় আমাদের মন, আত্মা, পরলোক,মানসিক কষ্ট,চিন্তা ধারা, ঈশ্বরের অস্তিত্ব, ঈশ্বরে বিশ্বাস এই সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবং বাস্তবে দেখা গেলে এই সমস্ত কিছুই আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। তাই খুব সাধারণভাবে বলা যায় দর্শন বিষয়টাও প্রত্যক্ষভাবেই আমাদের সঙ্গে জড়িত।। যে দর্শন পাঠ করলে দর্শনের বিভিন্ন জ্ঞান একসময় না একসময় আমাদের জীবনে অবশ্যই কাজে আসবে।।
আজকের এখানেই শেষ। পরের কিছু পর্বে এখানে আমি তোমাদের একাদশ শ্রেণীর দর্শনের সমস্ত বিষয়গুলি নিজের মতো করে তোমাদের সঙ্গে আলোচনা করবো। এবং চেষ্টা করব দর্শন সম্পর্কে যাতে কারো মনে কোনো প্রশ্ন না থাকে।।