ভারতসভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য এবং কার্যাবলী আলোচনা করো || সংঘবদ্ধতা গোড়ার কথা অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমি তোমাদের সঙ্গে মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভারতসভা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। ভারত সভা সম্পর্কে টীকা লেখ বা ভারতসভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল? এবং এর কার্যাবলী নিয়ে যে প্রশ্ন আসে, তার উওর এখান থেকে তোমরা পেয়ে যাবে।

ভারতসভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য এবং কার্যাবলী আলোচনা করো || সংঘবদ্ধতা গোড়ার কথা অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর 

 
রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ভারতসভা সম্পর্কে তথ্য
প্রতিষ্ঠাতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী প্রমুখ
প্রতিষ্ঠার সময়কাল ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে জুলাই
প্রতিষ্ঠার স্থান কলকাতার অ্যালবার্ট হলে
ভারত সভার সভাপতি রেভারেন্ট কৃষ্ণ মোহন বন্দ্যোপাধ্যায়
ভারত সভার সম্পাদক আনন্দমোহন বসু
ভারত সভার মুখপাত্র দ্য বেঙ্গলী
ভারত সভার প্রথম আন্দোলন সিভিল সার্ভিস সংক্রান্ত আন্দোলন
ভারত সভার দ্বিতীয় আন্দোলন ইলবার্ট বিল সংক্রান্ত আন্দোলন
সময়ের দিক থেকে বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা এবং জমিদার সভার পর ভারত সভা ছিল বাংলার তৃতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।

ভারত সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল?

১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দেব সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায, আনন্দমোহন বসু প্রমুখের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই ভারত সভা প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মূলত ভারতীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি করে ভারতীয়দের স্বার্থ রক্ষা করা। 

ভারত সভার প্রথম পর্যায়ের আন্দোলন :-

সর্বভারতীয় পর্যায়ে ভারত সভা ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা সংক্রান্ত আন্দোলন শুরু করেছিল। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ ফেব্রুয়ারি বড়লাট লর্ড লিটন এক নির্দেশ জারি করে 'সিভিল সার্ভিস' পরীক্ষার্থীদের বয়স ২১ থেকে কমিয়ে ১৯ করেন। এত কম বয়সে ভারতীয় ছাত্রদের পক্ষে ইংল্যান্ডে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতবিদ্বেষী এই নির্দেশের বিরুদ্ধে তীব্র জনমত গড়ে তোলেন। তিনি ভারত ও ইংল্যান্ডে একই সঙ্গে এই পরীক্ষা গ্রহণ এবং পরীক্ষার্থীর বয়স ২২ করার দাবি জানান। অবশেষে তাঁর ও ভারতসভার প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ সরকার ভারতবাসীর কিছু দাবি মেনে নিয়ে 'স্ট্যাটুটারি সিভিল সার্ভিস' প্রবর্তন করে। 

ভারত সভার দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন- 

লর্ড লিটনের শাসনকালে ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে 'অস্ত্র আইন' ও 'দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন' পাশ করে ভারতীয়নের স্বাধীনভাবে চলার এবং স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়। 'ভারত সভা' এই আইন দুটির বিরুদ্ধে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তোলে। 'ভারত সভা' সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপী এমন তীব্র প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে তোলে যে শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার 'দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন'-এর কিছু ধারা সংশোধন করতে বাধ্য হয়। 

ভারত সভার ইলবার্ট বিল সংক্রান্ত আন্দোলন-

ভারত সভা'র জাতীয়তাবাদী চেতনার তীব্র প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল ইলবার্ট বিল প্রতি আন্দোলনে'। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড রিপন তার ইলবার্ট বিল জারি করার মাধ্যমে ভারতীয় বিচারপতিদের ইউরোপীয় অপরাধীদের আদালতে বিচার করার অধিকার প্রদান করেন। কিন্তু এই আইনের বিরুদ্ধে ভারতে বসবাসকারী ইউরোপীয়রা এই আইনের বিরোধিতা করতে শুরু করে এবং এই বিল বাতিলের জন্য আবেদন করতে থাকে। যেহুতু এই আইন ভারতীয় বিচারপতিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই কারণে ভারত সভা ইউরোপীয়দের বিরুদ্ধে এই বিলের সমর্থনের জন আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন