বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার উৎকর্ষের পরিচয় দাও।। প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল?? || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহ এর বড় প্রশ্ন উত্তর
WB Class 11 history chapter 2 question answers in bengali |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় অধ্যায়ের ( WB Class 11 history chapter 2 question answers in bengali ) আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ( Class 11 history chapter 2 questions and answers ) " প্রাচীন মিশরের সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে কি জানো? মিশরের বিজ্ঞান ও সাহিত্য চর্চার অগ্রগতির পরিচয় দাও " প্রশ্নটির উওর ক্লাস 11 ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার উৎকর্ষের পরিচয় দাও।। প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল??
উওরঃ সুমেরীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি উৎকর্ষ -
সুমেরীয় সভ্যতার মানুষেরা শিক্ষা-সংস্কৃতির অগ্রগতি ঘটিয়েছিল। অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতার তুলনায় সুমেরীয় সভ্যতার যেসব নিদর্শন পাওয়া যায় তা থেকেই সুমেরীয় সভ্যতার শিক্ষা ও সংস্কৃতির অগ্রগতি সম্পর্কে বোঝা যায়।
চিত্রলিপি: অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতা গুলির মধ্যে লিপির ব্যবহার ঠিক ততোটাও আধুনিক ছিল না! যতটা আধুনিক ছিল সুমেরীয় সভ্যতার মানুষদের কাছে। বিভিন্ন ঐতিহাসিকরা মনে করেন সর্বপ্রথম সুমেরীয়রাই লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছিল। প্রথমদিকে সুমেরীয়রা যেসব লিপি আবিষ্কার করেছিল সেসব লিপি হত কোন চিত্রের ওপর।। প্রথমদিকে তারা বিভিন্ন ছবি এঁকে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করত।। এবং ছবির মাধ্যমে বিদ্যার বা মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যমকে চিত্র লিপি পিকটোগ্রাফি বলা হত।
কিউনিফর্ম লিপি : প্রথমদিকে সুমেরীয়রা যে চিত্রলিপি বা পিকটোগ্রাফি তৈরি করত তার মাধ্যমে তাদের সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করা সম্ভব হতো না।। এজন্য সুমেরীওরা কিউনিফর্ম লিপির আবিষ্কার হয়েছিল। সুমেরীয় ভেজা মাটি প্লেটের আকারে বানিয়ে নিতে তারপর সেই ভেজা মাটির উপর তারা কোনো কিছু দিয়ে তার ওপর লিখতো।। এরপর সেই ভেজা মাটির উপর লেখা লিপি আগুনে পুড়িয়ে বা রোদের শুকিতে শক্ত করে নেওয়া হতো।। এবং এভাবে তৈরি করা হতো কিউনিফর্ম লিপি।
গ্রন্থাগার : অনেক ঐতিহাসিক এবং গবেষক মনে করেন যে প্রাচীন সুমেরীয়রা তাদের বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাদানের জন্য কিউনিফর্ম লিপির ব্যবহার করতো।। এবং এই সব কিউনিফর্ম লিপি ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য তারা বিভিন্ন গ্রন্থাগারের স্থাপন করেছিল। সুমেরের একটি প্রাচীন শহরের একটি মন্দিরে যখন খনন করা হয় তখন সেখানে একটি প্রাচীন গ্রন্থাগার এর সন্ধান পাওয়া যায।। যেখানে হাজার বছর পুরনো বহু কিউনিফর্ম লিপি পাওয়া গিয়েছিল।।
স্থাপত্য ও চিত্রকলা : বাকি অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতা গুলির মতোই সুমেরীয় সভ্যতাতেও বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপত্য দেখা যায়।। সুমেরীয়রা আগুনে পোড়ানো বা রোদে শুকানো মাটির ইটকে ব্যবহার করে তারা যেমন নিজেদের বাড়িঘর তৈরি করত ঠিক একই ভাবে তাদের উপাস্য দেবতাদের জন্য এক প্রকার বিশেষ ধরনের কৃত্রিম পাহাড় বা মিনার তৈরি করত। সেসব সুউচ্চ পাহাড় গুলিকে বা মন্দির গুলিকে জিগুরাত বলা হত।। জিগুরাত কথার অর্থ হল স্বর্গের পাহাড়।।
বিজ্ঞানের অগ্রগতি : সুমেরীয় রা অন্যান্য দিক গুলি সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানের দিকেও যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছিল।। বিজ্ঞানে ক্ষেত্রে সুমেরীওরা গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা এবং চিকিৎসা বিদ্যার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছিল। তারা গণিত শাস্ত্রে বিভিন্ন গাণিতিক সংখ্যা ব্যবহার করা, যোগ, বিয়োগ, গুন ভাগ, বর্গমূল ঘনমূল নির্ণয় ইত্যাদি গাণিতিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল।। জ্যোতির্বিদ্যায় তারা চন্দ্র মাসের প্রচলন করেছিল।। এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে তারা নিজেদের তৈরি বিভিন্ন ওষুধ-পত্রই তারা তাদের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করত।।
এছাড়াও উপরের তথ্যগুলো ছাড়াও সুমেরীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তাদের শিল্প যেমন মৃৎশিল্প, বস্ত্র শিল্প,ধাত্য শিল্প ছিল যথেষ্ট পরিমাণে ভালো।। সুমেরীয়দের সমাজ ব্যবস্থা এবং আইন-কানুন ব্যবস্থাও ছিল অন্যান্য দিকগুলোর মতোই যথেষ্ট ভালো।।