প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল? || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহ এর বড় প্রশ্ন উত্তর
আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহ বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় অধ্যায়ের ( WB Class 11 history chapter 2 question answers in bengali ) আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ( Class 11 history chapter 2 questions and answers ) " প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল? " প্রশ্নটির উওর ক্লাস 11 ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল?
উওর: সুমেরীয় সভ্যতার মানুষদের জীবনযাত্রা প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা থেকে অনেকটাই উন্নত মানের ছিল।। কারণ সুমেরীয় সভ্যতার অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং পারদর্শিতায় পরিচয় দেখিয়েছিল।।
সুমেরীয় সভ্যতার কৃষি : ইউফ্রেটিস এবং টাইগ্রিস নদীর তীরে গড়ে ওঠা সুমেরীয় সভ্যতার মানুষদের একটি প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ করা।। সুমেরীয় সভ্যতার মানুষেরা ইউফ্রেটিস এবং টাইগ্রিস নদীর তীরবর্তী উর্বর মাটিতে বিভিন্ন চাষাবাদ করে বিভিন্ন রকমের ফসল ফলাতো।। এবং সেখানে উৎপাদিত ফসল থেকে তাদের সাধারণ জীবনযাপন খুব ভালো ভাবেই কেটে যেত।।
পশুপালন : বাকি অন্যান্য সভ্যতা গুলির মত সুমেরীয় সভ্যতার পশুপালনের দিকটি ছিল।। কৃষিক্ষেত্রের প্রয়োজনে বা পশুপালন থেকে অন্যান্য উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সুমেরীয়রা গরু, ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য পশু পালন করতে শুরু করেছিল।।
পশু পালনের ফলে তারা সেই সব পশুর নিজের কৃষি ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন পশু থেকে লোম সংগ্রহ, খাদ্য সংগ্রহ, তাদের চামড়া ইত্যাদি সংগ্রহ করত।
বাণিজ্য : সুমেরীয়রা তাদের অর্থনৈতিক দিক থেকে আারো উন্নতি লাভের জন্য তারা ব্যবসা-বাণিজ্যের পথে পা বাড়িয়েছিল। সুমেরীয়রা স্থল ও জলপথের মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে তাদের নিজস্ব জমিতে উৎপাদিত ধান গম যব ও অন্যান্য ফল, ফুল, পশম বস্ত্র, কার্পেট অলংকার ইত্যাদি নানান জিনিসের বাণিজ্য শুরু হয়েছিল।। প্রথমদিকে এসব ব্যবসার মধমাধ্যম ছিল খাদ্য সম্পদ।। আমি কিন্তু পরবর্তীকালে এসব ব্যবসার কাজে রুপার মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়েছিল।।
জীবন বৃক্ষ : সুমেরীয়দের জীবনযাত্রার সঙ্গে জীবন বৃক্ষ অর্থাৎ খেজুর গাছের দিকটি বিশেষ ভাবে জড়িয়ে আছে। সুমেরু অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে খেজুর গাছ জন্মাত তার সঙ্গে তারা তাদের নিজেদের বাড়িঘর বা বসতি অঞ্চলেও প্রচুর পরিমাণে খেজুর গাছ লাগাতো।। সেসব খেজুর গাছ থেকে তারা খেজুর গাছের রস, খেজুরের ফল এবং খেজুরের রস থেকে তৈরি সুমিষ্ট গুড় পেত।।। এছাড়াও খেজুর গাছের সমস্ত রস থেকে তাড়ি জাতীয় এক ধরনের বিশেষ মাদক তৈরি করা হত।। এজন্যই তারা খেজুর গাছকে জীবন বৃক্ষ বলতো।
ধর্মবিশ্বাস : বেশিরভাগ প্রাচীন সভ্যতা গুলিতেই ধর্মের একটি বিশেষ গুরুত্ব দেখা যায়।। প্রাচীন সুমেরীয় আদিবাসীদের কাছেও ধর্মের ঠিক একই জায়গা বা গুরুত্ব ছিল।। প্রাচীন সুমেরীয় রাত প্রকৃতির বিভিন্ন দিক গুলোর জন্য তারা বিভিন্ন আলাদা আলাদা দেবতার পূজা করতো।। সুমেরীয়দের কাছে সমুদ্র ও মাতৃ দেবতা হলেন নাম্মা। আকাশের দেবতা ছিল আন বা আনু।। জলের দেবতা ছিলেন এনকি।। এবং বাতাসের দেবতা হলেন এনলিস।। এসব দেব- দেবীর আরাধনা করার জন্য সমেরীয়রা একপ্রকার মন্দিরের নির্মাণ করতেন যা ছিল বেশ উঁচু।। সুমেরীয়দের দেবদেবীর আরাধনার জন্য তৈরি মন্দিরগুলিতে জিগুরাত বলা হয়।। যার অর্থ হলো স্বর্গের পাহাড়।।