সামন্ততন্ত্র বলতে কি বোঝো? সামন্ত প্রভু কাকে বলে? সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করো। || WB Class 11 History Question Answer & Notes

0

সামন্ততন্ত্র বলতে কি বোঝো? সামন্ত প্রভু কাকে বলে? সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করো। || WB Class 11 History Question Answer & Notes 

সামন্ততন্ত্র বলতে কি বোঝো? সামন্ত প্রভু কাকে বলে? সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করো। || WB Class 11 History Question Answer & Notes

এর আগের একটি ব্লগ পোস্টে আমি একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় ( wb class 11 history chapter 5 ) এর সামন্ততন্ত্র বলতে কি বোঝো? সামন্ত প্রভু কাকে বলে? এসব সম্পর্কে আলোচনা করেছি। কিন্তু যারা সেটা পড়তে পারোনি, তাদের জন্য আরও একবার আজকের এই ব্লগে আমি আবারও একদম শুরু থেকে আলোচনা করবো। 

আজকের বিষয় : 

• সামন্ততন্ত্র বলতে কি বোঝো? 

• সামন্ত প্রভু কাকে বলে?

• সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা

• সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা 

 

সামন্ততন্ত্র বলতে কি বোঝো? সামন্ত প্রভু কাকে বলে? সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করো। || WB Class 11 History Question Answer & Notes 


উওর : ইংরেজি ফিউডালিজম কথাটির বাংলা প্রতিশব্দ হলো সামন্ততন্ত্র বা সামন্তপ্রথা। ফিউডালিজম কথাটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ফিওডালিস এবং ফরাসি শব্দ ফিওডালিতে থেকে। কিন্তু এরকম শব্দের মাধ্যমে আমরা কখনই সামন্ততন্ত্র বা সামন্তপ্রথা কী তা বুঝতে পারবে না। তাই খুব সাধারণ ভবে আমরা সামন্ততন্ত্র  বা সামন্ত প্রথা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। খুব সাধারণভাবে সামন্ততন্ত্র সামন্ত প্রথা বলতে এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যেই শাসন ব্যবস্থা কোনো একটি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থেকে একজন শাসক আঞ্চলিকভাবে কোনো অঞ্চলের শাসন ব্যবস্থাকে পরিচালনা করে। এবং যেই ব্যক্তি শাসনকার্য পরিচালনা করে তাকে বলা হয় সামন্তপ্রভু। সুতরাং, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থেকে স্বাভাবিক আনুগত্য প্রদর্শন করে যখন একজন সামন্তপ্রভু কোনো অঞ্চলে শাসনকার্য পরিচালনা করে, তখন তাকে বলা হয় সামন্ততন্ত্র বা সামন্ত প্রথা।।

সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন কার্যাবলীঃ সামন্তপ্রভুদের যেমন বিভিন্ন ক্ষমতা থাকত ঠিক তেমনি সামন্তপ্রভুদের ক্ষমতা থাকা সঙ্গে সঙ্গে কিছু দায়িত্বও  থাকতো। এবং সেই দায়িত্বের জন্যই হোক বা সামন্তপ্রভুদের নিজের ইচ্ছেই হোক, তারা নিজেদের শাষনঅঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করতো। যেমন - 

শাসনকার্য পরিচালনাঃ সামন্তপ্রভুদের প্রধান কাজ ছিল সঠিকভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করা। সামন্তপ্রভুরা নিজের এলাকায় সঠিকভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন আইনি ব্যবস্থা ও নিয়মকানুনের সাহায্য নিতেন। 

কর আদায়ঃ সামন্তপ্রভুদের প্রধান কাজ ছিল নিজ এলাকার জনগনের কাছ থেকে কর বা খাজনা আদায় করা। 

জনকল্যাণমূলক কাজকর্মঃ সামন্ত প্রভুরা  যে সব সময়ই নিজেদের স্বার্থের জন্য কাজকর্ম করতো,সেটা কখনোই নয়। সামন্তপ্রভুরা অনেক সময় নিজের শাসন করা অঞ্চলে বসবাসকারী জনগণের কল্যাণের জন্য নানা জনকল্যাণমূলক কাজকর্ম করতো।   যেমন - জনগণের জন্য রাস্তাঘাট তৈরি করা,, সেতু, খাল, কুয়ো ইত্যাদি নির্মাণ করা,এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সেগুলি সংস্কার করা। 

বিচারকার্যঃ সামন্তপ্রভুরা তার অধীনস্থ জনগণদের বিভিন্ন বিরোধ অথবা অন্যায় অবিচারের নিষ্পত্তির জন্য নির্দিষ্ট বিচার ব্যবস্থা তৈরি করতেন। এবং সেই বিচারালয়ের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন বিরোধের বা অন্যায়ের নিষ্পত্তি করতেন।

রাজার সহায়তাঃ সামন্তপ্রভুদের একটি প্রধান কাজ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার অর্থাৎ রাজার বিপদের সময় রাজাকে সামরিক সাহায্য প্রদান করা। সামন্তপ্রভুরা নিজেদের একটি পৃথক সামরিক বাহিনী তৈরি করতো। তারা বিশেষ করে নিজেদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই সামরিক বাহিনী গঠন করতো। 

সামন্তপ্রভুদের বিভিন্ন ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা 

এরকমভাবে যেসব সামন্তপ্রভু কোনো কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থেকে কোনো অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনা করতেন,সেই সমস্ত সামন্তপ্রভুদের হাতে বিভিন্ন রকম ক্ষমতা থাকতো। এবং সেই ক্ষমতার জেড়েই তারা নিজেদের অঞ্চলে শাসনকার্য পরিচালনা করতে সক্ষম হতো। সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার সামন্তপ্রভুদের হাতে বিভিন্ন ক্ষমতা থাকতো। যেমন - 

স্বাধীন কার্যাবলীঃ সামন্ত প্রভুরা নিজের এলাকায় স্বাধীনভাবে নিজের শাসনকার্য পরিচালনা করতে পারত। কিন্তু সেক্ষেত্রে তাদের রাজার প্রতি নামমাত্র আনুগত্য দেখাতে হতো।

পৃথক মুদ্রার প্রচলনঃ  যদি কেন্দ্রীয় সরকারের শক্তি অনেকটা দুর্বল হতো, তাহলে সামন্তপ্রভুরা নিজেদের ক্ষমতায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব বা চাপমুক্ত হয়ে, নিজ নিজ এলাকায় স্বাধীনভাবে নিজের শাসনকার্য পরিচালনা করার মধ্যে দিয়ে, কেন্দ্রীয় সরকারের মুদ্রা ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে সেখানে তারা পৃথক মুদ্রাব্যবস্থার প্রচলন করতো। 

কর আদায়ঃ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থেকে প্রত্যেক সামন্তপ্রভুদের নিজ নিজ এলাকা থেকে কর আদায় করার অধিকার ছিল। সামন্ত প্রভুদের আদায় করা করের ঠিক কতটা অংশ তারা সেই কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে তুলে দিতো, তা কখনো নির্দিষ্ট করা থাকত না। তাই সামন্তপ্রভুরা কর আদায় করার ক্ষমতা থেকে যে বিপুল পরিমাণ কর আদায় করতো, তার মাধ্যমে তারা বিপুল পরিমান অর্থ সম্পদের মালিক হতো।

সামরিক বাহিনীঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামন্তপ্রভুদের নিজস্ব সামরিক বাহিনী থাকতো। এক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর ব্যবহার করা হতো সামন্তপ্রভুদের অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য। 


Tags : একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |অর্থনীতির বিভিন্ন দিক অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 11 history question answer | class 11 history suggestion 2022 | Class 11 history chapter 2 questions answers in bengali | WB Class 11 history notes 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top