দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা উচ্চ মাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় বা দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের (WBBSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'আন্তর্জাতীক সম্পর্কের প্রকৃতি ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করো।' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং পরবর্তীতে আমরা উচ্চ মাধ্যমিকের রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহ আরও অন্যান্য বিষয়ের সমস্ত নোটস + অনলাইন মকটেস্ট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।
আন্তর্জাতীক সম্পর্কের প্রকৃতি ও পরিধি বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করো।
উওরঃ- একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্র হিসেবে বিংশ শতাব্দীতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনা ব্যাপকভাবে শুরু হলেও প্রাচীনকালে যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হতো, তা জানা যায় কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র, ম্যাকিয়াভেলির দ্য প্রিন্স' হিস্টরি অফ পেলোপনেনশিয়ান ওয়ার, দাতের দ্য মোনারকিয়া প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে।। দীর্ঘকাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল কূটনৈতিক ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক আইন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এই মহাযুদ্ধের কারণ অনুসন্ধানের সূচনা হয়।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব রাজনীতিতে 2 মহাশক্তিধর রাষ্ট্র উত্থান, বহুসংখ্যক নতুন রাষ্ট্রের উৎপত্তি, আণবিক যুদ্ধের বিপদ,ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নির্ভরশীলতা,ঠান্ডা যুদ্ধ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনা আলোচনায় বিষয়টিকে বহুলাংশে বিস্তৃত করেছে।।
আন্তর্জাতীক সম্পর্কের প্রকৃতিঃ-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী E.H.Carr তাঁর Twenty Years Crisis গ্রন্থে বলেছিলেন যে, দীর্ঘকাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল যুদ্ধ প্রতিরোধের উপায় অনুসন্ধান করা। কিন্তু লারকে এবং সৈয়দ বলেছিলেন যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়কাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছিল কূটনৈতিক ইতিহাস। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক রাজনীতির আমূক পথ পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি আত্মপ্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্র হিসেবে আন্তর্জাতিক সমাজের পরিবর্তনের ধারাকে অনুসরণ করে চলেছে।।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিধিঃ-
বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের ধারাবাহিক পর্যালোচনার ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনার একটি নির্দিষ্ট সূচি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচ্যসূচি দ্রুত পরিবর্তনশীল।
সাধারণ অনুমান ও বিধিঃ-
অন্যান্য একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্রের ক্ষেত্রে তথ্য পর্যালোচনা এর মাধ্যমে যেমন সাধারণ অনুমান ও বিধি গড়ে তোলা হয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে সাধারণ অনুমান ও বিধি গড়ে তোলেন।।
নয়া বিশ্বব্যবস্থাঃ-
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসার ফলে পুরোনো জাতীয় রাষ্ট্র নতুন রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে। বিভিন্ন অরাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে নিজেদের ইচ্ছায় বা চাপে পড়ে রাষ্ট্রগুলি আঞ্চলিক সরকার গঠন করতে বাধ্য হয়েছে। 1991 সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এবং ঠান্ডা লড়াইয়ের সমাপ্তির পর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড,ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এর পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্বায়নের যুগে উন্নয়নশীল দেশগুলির দ্রুত অর্থনৈতিক পরিবর্তন হচ্ছে।।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ-
অন্যান্য স্বতন্ত্র শাস্ত্রের মতে বর্তমানে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এপ্রসঙ্গে বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি,গেম থিওরি, ভারসাম্য তত্ত্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্পর্কিত তথ্য বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
উপসংহারঃ-
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বর্তমানে ভৌতবিজ্ঞান,পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিদ্যা প্রভৃতির মতো একটি প্রকৃত বিজ্ঞানের মর্যাদা লাভ না করলেও এটিকে নিঃসংশয়ে একটি গতিশীল সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে অভিহিত করা যায়।।
আশাকরি, আন্তর্জাতীক সম্পর্কের প্রকৃতি ও পরিধি বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা তোমাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করে দিও।।
Tags :