জাতীয় স্বার্থ কাকে বলে? জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উপায় গুলি সম্পর্কে আলোচনা। || HS Political Science Question Answer & Suggestion 2023

0

 

জাতীয় স্বার্থ কাকে বলে? জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উপায় গুলি সম্পর্কে আলোচনা। || HS Political Science Question Answer & Suggestion 2023
দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা উচ্চ মাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় বা দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের (WBBSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali )  একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'জাতীয় স্বার্থ কাকে বলে? জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উপায় গুলি সম্পর্কে আলোচনা' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং পরবর্তীতে আমরা উচ্চ মাধ্যমিকের রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহ আরও অন্যান্য বিষয়ের সমস্ত নোটস + অনলাইন মকটেস্ট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।

জাতীয় স্বার্থ কাকে বলে? জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উপায় গুলি সম্পর্কে আলোচনা।

ভূমিকাঃ- আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণে জাতীয় স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বস্তুত বর্তমানে কোন রাষ্ট্র নিঃস্বার্থভাবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা পালন করে না। প্রতিটি রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে তার জাতীয় স্বার্থ প্রতিফলিত হয়। 

• বাস্তববাদী তাত্ত্বিক মর্গেন্থাও বলেছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির মূল সারবস্তু হলো জাতীয় স্বার্থ। জাতীয় স্বার্থকে বাদ দিয়ে কোনো রাষ্ট্রের বিদেশনীতি নির্ধারিত হওয়া সম্ভব নয়।

• লারচে ও সৈয়দ বলেছেন, মূল্যবোধের বিচার-বিশ্লেষণ করার সময় পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারকরা বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেন, সেটি হলো জাতীয় স্বার্থ। সুতরাং দেখা যায় যে, খুব সহজে বলা যায় জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়ন, বিশশান্তি,দেশীয় অখন্ডতা প্রভৃতি লক্ষ্যের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ হলো জাতীয় স্বার্থ।।

জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগঃ-  আন্তর্জাতিক সম্পর্কের লেখকরা জাতীয় স্বার্থকে মূলত ছয়টি ভাগে ভাগ করেছেন। যথা- 

মুখ্য বা প্রধান জাতীয় স্বার্থঃ- 

প্রধান বা মুখ্য জাতীয় স্বার্থ বলতে সেই সমস্ত জাতীয় স্বার্থকে, বোঝায় যার উপর কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নির্ভরশীল। যেগুলোকে রক্ষা না করতে পারলে কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে। যেমন কোনো রাষ্ট্রের প্রাকৃতিক, সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক বিকাশ এই ধরনের স্বার্থের অন্তর্ভুক্ত।

গৌণ জাতীয় স্বার্থঃ- 

গৌণ জাতীয় স্বার্থ বলতে রাষ্ট্রের সেই সকল স্বার্থকে বোঝায়, যেগুলি রাষ্ট্রের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত না হলেও যেগুলিতে সংরক্ষণ করা রাষ্ট্র তার কর্তব্য বলে মনে করে।।

যেমন -বিদেশী রাষ্ট্র বসবাসকারী নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষা করা,কূটনীতিক কর্মীদের কূটনৈতিক সুযোগ-সুবিধা সুনিশ্চিত করা ইত্যাদি।।

স্থায়ী জাতীয় স্বার্থঃ- 

স্থায়ী জাতীয় স্বার্থ বলতে সেইসকল জাতীয় স্বার্থকে বোঝায়, যা দীর্ঘমেয়াদী বা অপরিবর্তনশীল। যেমন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেদের প্রভাব সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ, সামুদ্রিক পথে নৌ-চলাচলের অবাধ স্বাধীনতা প্রদান ইত্যাদি।

পরিবর্তনশীল জাতীয় স্বার্থঃ- পরিবর্তনশীল জাতীয় স্বার্থ বলতে সেই সমস্ত স্বার্থ গুলিকে বোঝায় যেগুলি একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে কোন রাষ্ট্রের জাতীয় কল্যাণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। 

যেমন- রাজনৈতিক মতাদর্শ,জনমত, দলীয় রাজনীতি এরুপ জাতীয় স্বার্থের অন্তর্গত।

সাধারণ জাতীয় স্বার্থঃ- 

সাধারণ জাতীয় স্বার্থ বলতে সেই সমস্ত জাতীয় স্বার্থকে বোঝায়, যে গুলির অগ্রাধিকার রাষ্ট্র তার গুরুত্ব অনুযায়ী নির্ধারণ করে থাকে।যেমন বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা বা নিরস্ত্রীকরণ প্রভৃতি।

সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বার্থঃ- 

সুনিদিষ্ট জাতীয় স্বার্থ বলতে সেই সমস্ত জাতীয় স্বার্থকে বোঝায়, যেগুলি সাধারণ জাতীয় স্বার্থের যুক্তিসঙ্গত সম্প্রসারণে নির্ধারিত হয়ে থাকে। যেমন বিশ্বব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলির অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার প্রয়াস ইত্যাদি।

পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণী জাতীয় স্বার্থের ভূমিকাঃ- 

বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলি যে নীতির মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে তাকে বিদেশ নীতি বা পররাষ্ট্র নীতি বলা হয়। বর্তমানে বিদেশ নীতির সঙ্গে জাতীয় স্বার্থের এক সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। 

পররাষ্ট্র নীতিঃ- 

জাতীয় স্বার্থকে পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম নির্ধারক উপাদান বলা হয়ে থাকে। প্রতিটি রাষ্ট্র এমনভাবে তাদের পররাষ্ট্রনীতির তৈরি করে থাকে বাবা সৈয়দ করে থাকে যার মাধ্যমে তার জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষিত হবে তাই প্রতিটি প্রতিটি দেশ সাহায্য-সহযোগিতা বলপ্রয়োগ বলপ্রয়োগের ভীতিপ্রদর্শন চাপ সৃষ্টি করা মাধ্যমে অন্য দেশকে নিয়ন্ত্রণ করে নিজেদের পছন্দমতো সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য করে কূটনীতি জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্রনীতির যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি পররাষ্ট্রনীতির রূপায়নে কূটনীতি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পররাষ্ট্রনীতির সার্থকতা কূটনৈতিক কর্মীদের দক্ষতা উপরে নির্ভর করে।

প্রচারঃ- 

প্রচার এর সাহায্যে একটি দেশ তার পররাষ্ট্রনীতির অনুকূলে অন্যান্য দেশে জনমত গড়ে তোলে।জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে প্রচার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। প্রচারের সাহায্যে একটি রাষ্ট্র  তার পররাষ্ট্রনীতি বিশ্ব সমাজের মানুষের কাছে তুলে ধরে।।

জোট গঠনঃ- 

জাতীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার ক্ষেত্রে জোট গঠন একটি অন্যতম বা প্রধান পদ্ধতি। মূলত বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলি তাদের জাতীয় স্বার্থকে পূরণ করার জন্য বিভিন্ন জোট গঠন করে থাকে। এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমজোট NATO এবং সোভিয়েত ইউনিয়নে নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক WARSAW জোটের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।। 

বল প্রয়োগঃ- 

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী অথবা অতি বৃহৎ রাষ্ট্রগুলি তাদের জাতীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অনেক সময় বলপ্রয়োগ বা বলপ্রয়োগের ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। যেমন নিকারাগুয়া, অ্যাঙ্গেলা, গ্র্যানেভার উপরে এবং সম্প্রতি 2003 সালে ইরাকের উপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং 2022 সালে ইউক্রেনের ওপর সোভিয়েত আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করা যায়।

উপসংহারঃ- 

পরিশেষে বলা যায় পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ একমাত্র উপাদান হওয়া উচিত নয়। পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশ্ব মৈত্রী ও সৌভ্রাতৃত্ব বোধ গড়ে তোলা অন্যতম ও প্রধান নির্ধারক উপাদান গড়ে ওঠা উচিত বলে আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে মনে করতে পারি।।


Tags : 

দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | class 12 political science question answer  & suggestion 2023| wb class xii political science question answer | hs political science  question answer & notes in Bengali 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top