1857 সালের মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ কী?? ||মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ গুলি লেখো।
1857 সালের মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ |
• 1857 সালের মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ
• মহাবিদ্রোহ ব্যর্থতার কারণ কী??
* মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ গুলি লেখো
বিদ্রোহ চালানোর মতো পরিকল্পনার অভাব :
যেহেতু 1857 সালের মহাবিদ্রোহ এনফিল্ড রাইফেল ব্যবহার নিয়ে হঠাৎ শুরু হয়ে গিয়েছিল!! তাই বিদ্রোহ শুরু হবার পর ভারতীয় সিপাহীরা, বা বিদ্রোহীরা কিভাবে এই বিদ্রোহ চালিয়ে নিয়ে যাবে, সে সম্পর্কে তাদের কোনো পরিকল্পনা ছিল না।।
সাধারণ জনগণের অসমর্থন :
1857 সালের মহাবিদ্রোহ শুধুমাত্র উত্তর ও মধ্য ভারতের কিছু অঞ্চলেই তার প্রভাব সৃষ্টি করতে পেরেছিল।। এবং সেখানকার সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়েছিল।। উত্তর ও মধ্য ভারতের সাধারন জনগন ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের সাধারণ জনগণ 1857 সালের মহাবিদ্রোহের কোন প্রকার অংশগ্রহণ করেনি।। তাই বিরাট অংশের সাধারণ মানুষের অংশের সমর্থন না থাকায়, এই বিদ্রোহ ধীরে ধীরে সমাপ্তির দিকে পা বাড়ায়।।
বিদ্রোহ করার মত সঠিক অবস্থা :
1857 সালের মহাবিদ্রোহের বিদ্রোহীরা তাদের এই বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়ার মতো সঠিক কোনো পরিকল্পনা বা বিদ্রোহকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো কোন অবস্থা খুঁজে পায়নি।। সবথেকে বড় কথা হল এই বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়ার মত সঠিক নেতৃত্ব দানের দায়িত্ব, যা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের হাতে ছিল,, তা তিনি সঠিক ভাবে করতে পারেননি.. যার জন্য দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ এর অযোগ্য নেতৃত্ব দানের ফলে, এই বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়ার মতো সঠিক অবস্থা বিদ্রোহীদের হাতে ছিল না।।। বিদ্রোহীরা সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে সেরকম কোনও সাহায্য পাননি, যাতে তারা বিদ্রোহ চালিয়ে যেতে পারতেন।
নিচে দেওয়া লিঙ্ক গুলোর ওপর ক্লিক করে বিভিন্ন অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর এবং সাজেশন গুলো দেখে নিতে পারেন। 👇
1- ইতিহাসের ধারণা অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
2- ইতিহাসের ধারণা অধ্যায়ের সমস্ত 2 নম্বরের প্রশ্ন ও উওর
3- সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
4- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর ও সাজেশিন
6- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা প্রশ্ন উওর ও সাজেশন
9- বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের সমস্ত 2 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উওর
সঠিক লক্ষ্যহীন বিদ্রোহ :
1857 খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ সিপাহীদের দ্বারা শুরু হয়েছিল।। যখন সিপাহীরা তাদের এই মহাবিদ্রোহ চালিয়ে যেতে থাকে, তখন প্রথম দিকে বিদ্রোহীদের নিজেদেরও এই বিদ্রোহের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য ছিল না!!! এনফিল্ড রাইফেলের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট,সাময়িক ঝামেলার মধ্যে দিয়ে বিদ্রোহ শুরু হয়ে যায়!! যার ফলে বিদ্রোহীরা এই বিদ্রোহের ভবিষ্যত কী হবে, বা এই বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে তারা কি করতে চান, এসব কথা ভাবার সময় ই তারা খুজে পাননি।। পরবর্তীকালে যদিও বিদ্রোহীরা এই বিদ্রোহের মাধ্যমে ভারতে ব্রিটিশ সরকারের শাষনের শেষ করতে চেয়েছিল, কিন্তু বিদ্রোহীদের এই লক্ষ্য বেশিরভাগ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছেই অস্পষ্ট ছিল।। সাধারণ মানুষ, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ খুঁজে পাননি।।
বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়ার মতো সৈনিকের অভাব :
যেহেতু 1857 সালের বিদ্রোহ সিপাহী দ্বারাই শুরু হয়েছিল! তাই এই বিদ্রোহে শুধুমাত্র সিপাহিদের চালিয়ে যেতে হয়েছিল।। যদিও উত্তর ও মধ্য রাতে সাধারণ জনগণ এ তে যোগদান করেছিল কিন্তু সেই যোগদানের পরিমাণ ছিল খুবই কম।। তাই বিদ্রোহ কে ধরে রাখার মতো সৈনিক বিদ্রোহীদের হাতে ছিল না।।। যার ফলে বিদ্রোহী ভীত আস্তে আস্তে নড়বড়ে হয়ে পরে।।
যোগ্য নেতৃত্ব দানের মতো নেতাদের অভাব :
- সিপাহী বিদ্রোহ যেহেতু সিপাহিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং উত্তর ও মধ্য ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল, তবুও সিপাহী বিদ্রোহকে নেতৃত্বে দিয়ে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার মত সেরকম কোনো যোগ্য নেতাকে নেতৃত্বে দিতে দেখা যায়নি।। নানাসাহেব,ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ, কুনওয়ার সিং হযরত মহল, মৌলবী আহমদুল্লাহ,মনিরাম দেওয়ান প্রমুখ ছাড়া, মহাবিদ্রোহের সেরকম কোনো নেতাকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়নি।।।
2- 1857 এর মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কীরুপ ছিল??
অথবা,
মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কী ছিল?
অথবা,
1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ কে বাঙালি শিক্ষিত সমাজ সমর্থন করেনি কেন??
মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কীরুপ ছিল? |
ভুমিকা : 1857 খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহ বাংলায় ব্যারাকপুরে শুরু হলেও এই মহাবিদ্রোহের বিদ্রোহীরা কখনোই বাঙালি শিক্ষিত সমাজের বিশেষ কোনো সমর্থন পায়নি।। বিভিন্ন বাঙালি, বিভিন্ন সময়ে 1857 খ্রিষ্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রতি তাদের বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করেছেন।।
এর পেছনে বাঙালি সমাজের কারণগুলি হল :
কল্যাণকর ব্রিটিশ শাসন :
বাঙালী শিক্ষিত সমাজ মনে করত যে ব্রিটিশ সরকারের শাসনের মাধ্যমেই তারা আজ এতটা উন্নত হতে পেরেছে।। এবং ভবিষ্যতে ব্রিটিশ সরকারের শাসনের মাধ্যমেই বাঙালী সমাজ আরো বেশি উন্নত হবে।। যদি বিদ্রোহীদের দ্বারা ব্রিটিশ শাষনের সমাপ্তি ঘটে, তাহলে বাঙ্গালীদের বিশেষ ক্ষতি হবে।। এজন্য শিক্ষিত বাঙ্গালী সমাজ প্রথম থেকেই এই বিদ্রোহের বিপক্ষে ছিল।।
মধ্যযুগীয় শাষন ব্যবস্থা :
শিক্ষিত বাঙালি সমাজ মনে করতো যে বিদ্রোহীদের দ্বারা নির্বাচিত দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের নেতৃত্বের মাধ্যমে যদি বিদ্রোহীরা এই বিদ্রোহ জিতে যায়, তাহলে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের পতন ঘটবে। এবং এরপর ভারতে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের রাজা -মহারাজাদের মধ্যযুগীয় শাসনব্যবস্থা চলে আসবে।। যা আধুনিক ভারতের জন্য কখনোই কল্যাণকর হবে না।।।
বিদ্রোহের সঠিক ভবিষ্যৎ :
শিক্ষিত বাঙালি সমাজ সিপাহিদের দ্বারা পরিচালিত এই বিদ্রোহের মধ্যে তারা নির্দিষ্ট কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পায়নি।। বিদ্রোহীরা এই বিদ্রোহের মাধ্যমে কি করতে চায় বা তারা এতে জয় লভা করলে এরপর এর ভবিষ্যৎ কি হবে বা পরে দেশের শাসন ব্যবস্থা কিরূপ হবে, তা বাঙালির কাছে একেবারেই অস্পষ্ট ছিল।।। তার জন্য বাঙালিরা এই বিদ্রোহ যেমন অংশগ্রহণ করেনি, তেমন কোনো সমর্থন করতেও এগিয়ে আসেনি।।।
মূলত উপরিক্ত কিছু কারণে শিক্ষিত বাঙালি সমাজ 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ কে সমর্থন করেনি।।
1857 এর মহাবিদ্রোহের প্রতি বাঙালি শিক্ষিত সমাজ - বিদ্রোহের সমর্থনে না থাকলেও অসমর্থনে নিশ্চয়ই ছিল।।।
কলকাতায় ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এর উচ্চবিও কর্তারা যেমন, রাজা রাধাকান্ত দেব, কালীপ্রসন্ন সিংহ প্রমূখ কলকাতার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা হিন্দু মেট্রোপলিটন কলেজে সিপাহী বিদ্রোহের তীব্র নিন্দা করেছিলেন।। এবং যেসব নেতৃবৃন্দ এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধেও এরা নিন্দায় সোচ্চার হয়েছিলেন।।।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে কিছু কিছু মানুষ এই বিদ্রোহ দমনে ব্রিটিশ সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করার কথাও বলেছিলেন।।
( কিছু কিছু বাঙালি এই বিদ্রোহেত প্রতি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করলেও, ভারতের বিখ্যাত বাঙ্গালী সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আঠারোশো সাতান্ন খ্রিষ্টাব্দের এই মহাবিদ্রোহকে বিশেষভাবে সমর্থন করেছিলেন।।
🔶🔷🔶🔷🔶🔷🔶🔷🔶🔷🔶🔷🔶🔷🔶
মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ 8 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর 👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।।