উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করো || উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরন |||

5

 

উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করো || উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরন || উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণ এর সীমাবদ্ধতা || উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের চরিত্র ও প্রকৃতি || মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উওর || মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 


উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের চরিত্র ও প্রকৃতি
 উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের চরিত্র ও প্রকৃতি 



উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরন  


-- নবজাগরন বলতে কী বোঝায়?

- ফরাসি শব্দ রেনেসাঁস কথাটির সাধারণ বাংলা  অর্থ হলো নবজাগরন।  ফরাসি ঐতিহাসিক মিসেলে সর্বপ্রথম রেনেসাঁস কথাটির ব্যবহার করেছিলেন। যদি সহজে নবজাগরন কথাটির মানে বলতে বলা হয় তাহলে বলা যায় যে নবজাগরন বলতে বোঝায় সমাজের নতুন যুগ বা সমাজের অগ্রগতি।।

-ভুমিকা ::-

- বাংলায় 1813 খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার সনদ আইন পাস করে এই ঘোষনা করে যে কোম্পানি সরকার প্রতি বছর এক লক্ষ টাকা ভারতীয় শিক্ষাক্ষেএে ব্যয় করবে। এবং এরপর মেকলে মিনিটের সুপারিশে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সরকারি শিক্ষানীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এবং এরপর আস্তে আস্তে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে।
এবং এই পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে উনিশ শতকে বাংলার সমাজ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মে যে অগ্রগতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তাকেই বলা হয় বাংলার নবজাগরন। _

উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করো || উনিশ শতকেত বাংলার নবজাগরণের চরিত্র প্রকৃতি




- বিভিন্ন ঐতিহাসিকগন উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরনের সাথে ইউরোপের নবজাগরনের তুলনা করেছেন। তাই বিভিন্ন ঐতিহাসিক দের মধ্য উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরনকে নিয়ে বিতর্ক তৈরী হয়েছে। যেমন-

-1: বাংলার নবজাগরনের ব্যপ্তি ::-

-  অনেকর মতে বাংলার নবজাগরন আর ইউরোপের নবজাগরন কখনোই এক ছিলনা। কারন বাংলার নবজাগরনের ব্যপ্তি ছিল খুবই কম। বাংলার নবজাগরন ছিল শুধুমাত্র শহর কেন্দ্রীয়। বিশেষ ভাবে কলকাতা কেন্দ্রীক। এবং অন্যদিকে ইউরোপের নবজাগরনের প্রসার ছিল একটি বিঢ়াট অংশ নিয়ে।


-2:: সমাজের প্রভাবিত অংশ ::-

-- যেহেতু উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরন শুধুমাত্র কলকাতা কেন্দ্রীক ছিল। তাই কলকাতার পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষদের মধ্যেই এই নবজাগরন সীমিত ছিল। অন্যদিকে সমাজের বড়ো অংশই এই নবজাগরন থেকে দুরে ছিল।
তাই অধ্যাপক অনিল শীল এই নবজাগরনকে এলিটিস্ট আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন।



- 3, ব্রিটিশ শাষন নির্ভরতা ::-

-- বাংলার এই নবজাগরন সেই সময় খুব বেশি ব্রিটিশ নির্ভর হয়ে পরেছিল। পাশ্চাত্য শিক্ষার ওপর নির্ভরশীল বাঙ্গালীরা মনে করত যে ব্রিটিশ শাষন তাদের জন্য সর্বদা কল্যাণকর।  তাই ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার লিখেছেন যে "" ইংরেজদের দেওয়া সবচেয়ে বড়ো উপহার হল আমাদের উনিশ শতকের নবজাগরন।


-4, হিন্দু ভাবধারা ::-

- অনেকে এটা মনে করেন যে উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরন প্রকৃতপক্ষে হিন্দু জাগরনবাদে পর্যবসিত হয়। রাজা রাধাকান্ত দেব, রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, প্রমুখ হিন্দুশাস্রকে ভিত্তি করে সমাজ পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। তা অনেকের মতে উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরনে হিন্দু জাগরনের ছাপ দেখতে পাওয়ার কথা বলেছেন।।


- উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরন বিতর্ক ।
-

-
- ভুমিকা ::-  বাংলায় 1813 খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার সনদ আইন পাস করে এই ঘোষনা করে যে কোম্পানি সরকার প্রতি বছর এক লক্ষ টাকা ভারতীয় শিক্ষাক্ষেএে ব্যয় করবে। এবং এরপর মেকলে মিনিটের সুপারিশে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সরকারি শিক্ষানীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এবং এরপর আস্তে আস্তে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার ঘটতে থাকে।
এবং এই পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে উনিশ শতকে বাংলার সমাজ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মে যে বৌদ্ধিক  অগ্রগতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তাকেই বলা হয় বাংলার নবজাগরন। কিন্তু উনিশ শতকে বাংলার  সমাজ, শিক্ষা, সংস্ক‍‍ৃতি, ধর্ম প্রভ‍ৃতিতে এই  বৌদ্ধিকে অগ্রগতিকে কেউ নবজাগরন বলে মানেন। আবার কেউ উনিশ শতকে বাংলার  সমাজ, শিক্ষা, সংস্ক‍‍ৃতি, ধর্ম প্রভ‍ৃতিতে এই বৌদ্ধিকে অগ্রগতিকে নবজাগরন বলে স্বীকার করেন না।।

- নবজাগরন অভিধার পক্ষে :: -
-
- 1, ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকারের মত::-

- ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার উনিশ শতকে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে বাংলায় যে বৌদ্ধিক অগ্রগতি শুরু হয়েছিল তা তিনি নবজাগরন বলে মেন নেন। যদুনাথ সরকার তার "হিস্ট্রি অফ বেঙ্গল "
- গ্রন্থে লিখেছেন যে "" ইংরেজদের দেওয়া সবচেয়ে বড়ো উপহার হল আমাদের উনিশ শতকের নবজাগরন"।

ঐতিহাসিক সুশোভন সরকার এর মতামত :

- ঐতিহাসিক সুশোভন সরকারও যদুনাথ ঠিক যদুনাথ সরকারের মতনই মতামত ব্যক্ত করেছেন।। সুশোভন সরকার এর মতে উনিশ শতকেত বাংলায় বৌদ্ধিক অগ্রগতি ছিল বাংলার বিশেষ নবজাগরণ।।

- নবজাগরন অভিধার বিপক্ষে :: -
-

- অশোক মিএ, বিনয় ঘোষ, সুপ্রকাশ রায়, ড. বরুন দে, ড. সুমিত সরকার প্রমুখ   উনিশ শতকে বাংলার  সমাজ, শিক্ষা, সংস্ক‍‍ৃতি, ধর্ম প্রভ‍ৃতিতে এই বৌদ্ধিকে অগ্রগতিকে নবজাগরন বলে স্বীকার করেন না।।

-


  অশোক মিএের মত::-
-
- সেন্সাস কমিশনার অশোক মিএ 1951 খ্রিষ্টাব্দের সেন্সাস রিপোর্টে উনিশ শতকের নবজাগরনকে তথাকথিত নবজাগরন বলে উল্লেখ করেছেন। কেননা তার মতে বাংলা এই নবজাগরন ছিল শুধুমাত্র কলকাতা কেন্দ্রীক।
-

- বিনয় ঘোষের মতে::-
-
-  বিনয় ঘোষ মনে করেন উনিশ শতকের নবজাগরন ছিল এইটি ঐতিহাসিক প্রবঞ্চনা।

- সুপ্রকাশ রায়ের মতামত ::-

-সুপ্রকাশ রায় মনে করেন যে উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরন এবং ইউরোপের নবজাগরন ছিল সম্পুর্ন পৃথক।
এছাড়া  ড. বিনয় বোস মনে করেন যে উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরন ছিল একটি ঐতিহাসিক প্রবঞ্চনা

-

উপসংহার : উনিশ শতকে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য আদর্শের হাত ধরে এই নবজাগরণের শুরু হয়।। বাংলার নবজাগরণের বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকলেও এই নবজাগরণ বাংলার সাংস্কৃতিক জাগরণকে জাগিয়ে তুলেছিল।।  এবং বাংলার নবজাগরণ গ্রাম বাংলার দিকে তার প্রভাব ফেলতে না পারলেও,  বাংলায় বিশেষ কেন্দ্র কলকাতাতে তার যুক্তিবাদ মানবতাদ প্রসার ঘটায় এবং নানা দিকে তার প্রভাব রেখে যায়।।।


1- ইতিহাসের ধারণা অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর 

2- ইতিহাসের ধারণা অধ্যায়ের সমস্ত 2 নম্বরের প্রশ্ন ও উওর 


3-  সংস্কার :  বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর 

4- প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর ও সাজেশিন 


5-প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ, বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উওর | ২ নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উওর 


6- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা প্রশ্ন উওর ও সাজেশন 


7-  সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা - মাধ্যমিক গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন || 2 Mark এর সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তার উওর সহকারে।।


8- বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ ( উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমভাগ পযর্ন্ত  ) - বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর + মাধ্যমিক সাজেশন।।


9-  বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের সমস্ত 2 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উওর 



 10- নীল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল || নীল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো || 1860 খ্রিস্টাব্দে নীল বিদ্রোহ কারণ ও ফলাফল


11-বিদ্যাসাগরের নেতৃত্বে বিধবা বিবাহ আন্দোলনের সংক্ষিপ পরিচয় 


12- উনিশ শতকের সমাজসংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজের ভুমিকা। 


13- সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো || 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।।


উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণ এর সীমাবদ্ধতা || উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের সীমাবদ্ধতা গুলি আলোচনা করো

ভুমিকা : উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের মূল ভিত্তি ছিল, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাদী আদর্শ।। ফ্রাঁসোয়া দেশের প্রধান দিকটি হলো এশিয়াটিক সোসাইটি, কলকাতা মাদ্রাসা, কলকাতা সংস্কৃত কলেজ প্রভৃতি। অন্যদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষা বাংলায় মানবতাবাদ, যুক্তিবাদ, প্রগতিবাদী আদর্শের সৃষ্টি করেছিল।। এবং এই প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য আদর্শের ঘাত-প্রতিঘাতেই সৃষ্টি হয়েছিল উনিশ শতকেত বাংলার নবজাগরণ।।  উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণ বিশেষ কিছু সীমাবদ্ধতাও ছিল --

যেমন -

- শহর কেন্দ্রিক নবজাগরণ :
-
- উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণ ছিল মূলত শহরকেন্দ্রিক।।। শহরের বিশেষ করে কলকাতার বুদ্ধিজীবী ও উচ্চবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত সমাজ সম্প্রদায়ের ছিক নবজাগরণের অংশ।। উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণ শহর ছাড়িয়ে গ্রামবাংলার দিকে তার বিশেষ কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।।

- নবজাগরণের ব্যপ্তি  :
-
- উনিশ শতকের নবজাগরণের শুধুমাত্র কলকাতা শহরের মানুষেরাই এর সুযোগ সুবিধা লাভ করেছিল।। কিন্তু এই নবজাগরণ বাংলার গ্রাম বাংলার মানুষদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দিতে পারেনি!! গ্রাম বাংলার মানুষেরা এই নবজাগরণের অংশই হতে পারেনি।। এর ব্যপ্তি ছিল শুধুমাত্র শহরেই।।


সমাজে নবজাগরণ সীমা -

উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণ প্রধানত হিন্দু সমাজ ও ধর্ম সংস্কার নিয়ে ছিল।। এবং বিশেষ করে এই নবজাগরণ হিন্দু সমাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।। হিন্দু সমাজের বাইরে অন্যান্য ধর্মের মানুষের ওপর এই নবজাগরণ তখন বিশেষ কোনো প্রভাব সৃষ্টি করতে পারেনি।।

- নবজাগরণের ফলে সমাজের উচ্চবিত্ত মানের মানুষের মধ্যে এর প্রভাব পড়লেও তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।। যার ফলে সাধারণ মানুষ এই ধরনের কোনো সুযোগ-সুবিধাও লাভ করতে পারেনি।।


🔵🔴🔵🔴🔵🔴🔵🔴🔵🔴🔵🔴🔵🔴🔵



মাধ্যমিক 2022 এর জন্য 8 নম্বর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-উত্তর দেখতে এখানে ক্লিক করুন।


Click Here -

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
To Top